Thursday 27 September 2012



প্রস্তাবিত পরিবহন আইন চূড়ান্তকরণের পূর্বে  প্রতিটি জেলায় সরাসরি মতামত গ্রহণ প্রয়োজন

যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত ঢাকা যানবাহন সমন্বয় বোর্ড কর্তৃক প্রণীত “প্রস্তাবিত খসড়া সড়ক পরিবহন ও চলাচল আইন, ২০১২” এর উপর ওয়েবসাইটে মতামত চেয়ে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। আইনটি সারাদেশে সড়ক পরিবহন ও চলাচলের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য প্রযোজ্য হবে এবং মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর পরিবর্তে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সুতরাং এই আইন চূড়ান্তকরণের পূর্বে দেশের প্রতিটি জেলায় সব শ্রেণীর মানুষের সরাসরি মতামত ও সুপারিশ গ্রহণ করতে হবে। কারণ এখন পর্যন্ত দেশের অধিকাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহারে অভ্যস্ত নয়। প্রস্তাবিত আইনে পথচারী এবং বাই-সাইকেল চলাচলের ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতা আরোপ করা হয়েছে যা পরিবর্তনের করা প্রয়োজন।

 হাঁটা ও বাই-সাইকেলে চলাচল কার্বণ নির্গমন-জ্বালানী নির্ভরতা-যাতায়াত খরচ হ্রাস ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে ভূমিকা রাখে বিধায় মানুষকে উৎসাহ প্রদানের জন্য বাই-সাইকেলকে উক্ত ধারায় উল্লেখিত বিধান এর আওতামুক্ত রাখা প্রয়োজন। কিন্তু প্রস্তাবিত আইনে পথচারী এবং বাই-সাইকেলের উপর অযাচিত নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে যান্ত্রিক যানবাহনের প্রাধান্য ল্য করা গেছে। পথচারী কর্তৃক সড়ক ব্যবহারের সময় সংকেত প্রদানকারী যন্ত্র, বাতি/ল্যাম্প ও রিফেক্টর ব্যবহার, রাস্তায় পথচারী ক্রসিং এর জায়গা না থাকলে পথচারীদের যানবাহনকে রাস্তা ছেড়ে দেওয়াসহ অনেকগুলি ধারা মানুষের হাঁটার ক্ষেত্রে আইনগত বাধা তৈরি করবে। কারণ নগরের রাস্তা কিংবা মহাসড়কে পথচারী ক্রসিং নাই বললেই চলে, এ আইন প্রণীত হলে যানবাহনের চালকরা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে এবং দর্ঘটনা বাড়বে। এমনিতেই বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালনা এবং দূর্ঘটনা নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই পরিবেশবান্ধব, সাশ্রয়ী ও নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করার জন্য প্রস্তাবিত আইনকে সংশোধন করতে হবে।

 আইনে উল্লেখিত বাই-সাইকেলের রেজিস্ট্রেশন এবং বাইসাইকেল চালকের লাইসেন্স বিধান পরিবর্তন করতে হবে। কারণ, বাই-সাইকেল কার্বণ নির্গমন-জ্বালানী নির্ভরতা-যাতায়াত খরচ হ্রাস ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে ভূমিকা রাখে বিধায় মানুষকে উৎসাহ প্রদানের জন্য বাই-সাইকেলকে উক্ত ধারায় উল্লেখিত বিধান এর আওতামুক্ত রাখা প্রয়োজন। বাই-সাইকেলের জন্য রেজিস্ট্রেশন ও চালকের লাইসেন্স গ্রহণের বাধ্যবাধকতা বাই-সাইকেলের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করবে। ইউরোপে বাই-সাইকেলের প্রচলন বেশি বিশেষ করে নেদারল্যান্ড, ডেনমার্ক, জার্মানী ইত্যাদি দেশে। নেদারল্যান্ডে বাই-সাইকেলে সারাদেশে ২৭% এবং নগরভিত্তিক যাতায়াত ব্যবস্থায় ৫৯% চলাচল হয়। অথচ সেখানে বাই-সাইকেলের চালকের লাইসেন্সের প্রয়োজন হয় না এবং রেজিস্ট্রেশনের বাধ্যবাধকতা নেই।

আইনটি প্রণয়নের উদ্দেশ্য পথচারীদের অধিকার নিশ্চিত, চালকদের আইন পালণে উৎসাহী করা, পাবলিক পরিবহন ব্যবস্থাকে উৎসাহী ও ব্যক্তিগত পরিবহন নিরুৎসাহিত করা, গাড়ীর বেপরোয়া চলাচল বন্ধ করা, পরিবহন চালনার সাথে জড়িতদের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত, সর্বোপরি যাতায়াত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। গাড়ির গতি এবং যান্ত্রিক পরিবহন ব্যবস্থাকে প্রধান্য দিয়ে আইন প্রণয়ন করা হলে জনগণ এ আইনের সুফল পাবে না এবং আইন সংশোধনের লক্ষ্য অর্জন ব্যহত হবে।



সংসদ এলাকায় পরিবেশ ধ্বংসকারী তামাক কোম্পানির অর্থে  গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহবান
                                     

“বিদেশী তামাক কোম্পানির টাকায় গাছ লাগানো হবে সংসদ এলাকায়” শীর্ষক একটি সংবাদ গতকাল ও আজ, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। জাতীয় সংসদ এলাকায় তামাক কোম্পানির বৃরোপন কর্মসূচী আয়োজনের প্রেক্ষিতে আমরা উদ্বিগ্ন। তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার শুধু মানুষের স্বাস্থ্যের নয়, পরিবেশ জন্যও ক্ষতিকর। তামাক উৎপাদন ও শুকানোর প্রক্রিয়ায় প্রতিনিয়ত উজার হচ্ছে বন। বাংলাদেশে পার্বত্য এলাকায় তামাক চাষের জন্য বন উজার হওয়ার পাশাপাশি ধ্বংস হচ্ছে ফসলী জমি ও পরিবেশ। তামাক কোম্পানিগুলো পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যকলাপ বন্ধে জনস্বার্থে একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে এবং  বর্তমানে বিচারধীন রয়েছে।

তামাক কোম্পানিগুলো দেশে প্রতিবছর ১২ লক্ষ মানুষের ক্যান্সার, হৃদরোগ, যক্ষা, ডায়বেটিস, হাঁপানি, উচ্চরক্তচাপ ইত্যাদি রোগের জন্য দায়ী। এছাড়া ৩ লক্ষ ৮২ হাজার মানুষের পঙ্গুত্ব এবং ৫৭ হাজার মানুষের মৃত্যুর জন্যও দায়ী এ তামাক কোম্পানিগুলো। তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের কারণে সৃষ্ট রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে গিয়ে স্বাস্থ্য খাতে সরকারের প্রতিবছর ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে হয। যা তামাক কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে প্রাপ্ত রাজস্বেরও দ্বিগুণ।

তাদের পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যকলাপকে আড়াল করতে তামাক কোম্পানিগুলো প্রতিবছর বৃক্ষরোপন কর্মসূচীর আয়োজন করে থাকে। সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচীর নামে এ কর্মসূচীর মাধ্যমে কোম্পানিগুলো সহানুভুতি আদায়ের জন্য পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রচারও করে থাকে। এ সকল কার্যক্রমের প্রেক্ষিতে আড়ালে পড়ে যায় বন নিধনের কর্মকান্ড। কোম্পানিগুলো বৃক্ষরোপনের এ ইমেজ ব্যবহার করে সরকারের বিভিন্ন নীতি ও কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্থ করে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রক্কালে মহান জাতীয় সংসদের তামাক কোম্পানির এ ধরনের কার্যক্রম আইনের সংশোধন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার প্রচেষ্টা বলে প্রতীয়মান।

বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক তামাক নিয়ন্ত্রণ চুক্তি ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) স্বাক্ষর ও র‌্যাটিফাই (অনুস্বাক্ষর) করেছে। এফসিটিসি অনুসারে তামাক কোম্পানির পৃষ্ঠপোষকতা গ্রহণ করা যায় না। সংসদ সচিবালয় তামাক কোম্পানির পৃষ্ঠপোষকতায় গাছের চারা গ্রহণ করলে সেটা হবে এ আন্তর্জাতিক চুক্তির লঙ্ঘন এবং বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি এতে করে ক্ষুন্ন হবে।

জাতীয় সংসদ ভবন চত্তরে পরিবেশ বান্ধব গাছ লাগানো একটি মহৎ চিন্তুা। কিন্তু এ গাছ  লাগানো কোনভাবেই পরিবেশ ধ্বংশকারী এবং রোগ ও মৃত্যু সৃষ্টিকারী প্রতিষ্ঠানের অর্থে হওয়া সমীচীন নয়। জাতীয় সংসদ কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে পরিবেশ মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিদপ্তর, বন অধিদপ্তর  বা জলবায়ু ফান্ড কর্তৃপক্ষের নিকট এ জন্য অর্থে চাইতে পারেন। আমরা আশা করি, সংসদ এলাকায় তামাক কোম্পানির পৃষ্ঠপোষকতায় গাছ লাগানো কর্মসূচী হতে থেকে বিরত রাখতে মাননীয় স্পীকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।






পরিবেশ, স্বাস্থ্য, জ্বালানী ও যাতায়াত খরচ বিবেচনায়
সাইকেলে চলাচলের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি জরুরী 


প্রতিদিন ৩০ মিনিট অথবা বছরে ২১০০ কিমি সাইকিং করলে ৫০ ভাগ মুটিয়ে যাওয়া, ৩০ ভাগ ব্লাড প্রেসার, ৫০ ভাগ হৃদরোগ, ৫০ ভাগ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস পায়। সাইকেল দূষণ ও জ্বালানীমুক্ত বাহন। সাইকেলে চলাচলে খুবই কম জায়গা লাগে। এজন্য সাইকেলে চলাচলের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা জরুরী।

 সাইকেলে চলাচল উপযোগি পরিবেশ আজ সময়ের দাবী। সাইকেল ব্যবহার না করার ফলে নানা রকম স্বাস্থ্য সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্বল্প দূরত্বে যাতায়াত হয় ঢাকায়। তাই ঢাকায় মানুষ হেটে ও সাইকেলে যাতায়াত করতে পারে। এজন্য সাইকেলে চলাচল উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।  

 বর্তমানে বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ অধিক হারে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমণ। যান্ত্রিক যানবাহনের ব্যবহার বৃদ্ধি যার অন্যতম কারণ। যান্ত্রিক যানবাহনের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার দূষণ ও জ্বালানীর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবে। সাইকেলের পাশাপাশি হাঁটা ও পাবলিক বাসে চলাচলের সুবিধা বৃদ্ধি ব্যক্তিগত গাড়ির উপর নির্ভরশীলতা কমাতে সাহায্য করবে। বিশ্বে অনেক উন্নত দেশে নগরভিত্তিক যাতায়াত ব্যবস্থায় সাইকেলে চলাচলে উৎসাহিত করতে পৃথক লেন, পথ ও স্ট্যান্ড তৈরিসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। যা প্রতি বছর সাইকেলের ব্যবহার বৃদ্ধি করছে। আমাদের দেশেও সাইকেলে নিরাপদভাবে চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় পদপে গ্রহণের মাধ্যমে পরিবহণ ব্যবস্থায় দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়ন করা সম্ভব।

এছাড়া জাতীয় সাইকিং দিবস ঘোষনা ও সাইকেলে চলাচল উপযোগী পরিবেশের তৈরি, ১৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় সাইকিং দিবস ঘোষনা করা; শহরের সর্বত্র সাইকেলে চলাচলের জন্য নেটওয়ার্ক তৈরি করা; সাইকেলের জন্য পৃথক লেন ও পথ তৈরি করা; সাইকেলের জন্য স্ট্যান্ড তৈরি করা; সাইকেলের উপর আরোপিত কর কমানো; ফ্রি সাইকেল সার্ভিস চালু করা; “বাইক এন্ড রাইড সিস্টেম” চালু করা; পথচারী, রিকশা ও পাবলিক বাসে চলাচলের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।





জলাশয় রক্ষায় রাজনৈতিক অঙ্গীকার গুরুত্বপূর্ণ


বৃটিশ শাসনামল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, জলাশয় সংরক্ষণ আইনসহ প্রায় দুইশত আইন কোন না কোনভাবে জলাশয় দূষণ ও দখল প্রতিরোধ, সংরক্ষণ ও রক্ষা বা এ সম্পর্কিত বিষয় উল্লেখ করেছে। কিন্তু এসব আইন বাস্তবায়নও কোন একক সংস্থার কাছে না থাকায় আইনের বাস্তবায়ন শিথিলভাবে হচ্ছে এবং অনেক ক্ষেত্রে কোন বাস্তবায়নই হচ্ছে না। তাছাড়া দখল ও দূষণকারীদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার কারণেও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায়শ আইন বাস্তবায়নে বাধার সম্মুখীন হয়। তাই ঢাকাসহ সারাদেশের পুকুর, লেক, খাল, নদী রক্ষায় রাজনৈতিক অঙ্গীকার সর্বাগ্রে প্রয়োজন পাশাপাশি জলাশয় রক্ষায় একটি পূর্ণাঙ্গ আইন ও এর বাস্তবায়নে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান করা দরকার।


, লেক, পুকুর, খাল, নদীসহ সব জলাশয় রক্ষায় বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব পালন করলেও পূর্ণাঙ্গ কোন প্রতিষ্ঠান নাই। রাজউক, ঢাকা সিটি করপোরেশন, ঢাকা ওয়াসা, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কতৃপক্ষ, পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন ইত্যাদি বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব পালন করছে। এতগুলো প্রতিষ্ঠান থাকায় কোন প্রতিষ্ঠানই সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে না। যে কারণে এসব প্রতিষ্ঠানকে সমন্বয় কিংবা শুধু জলাশয় রক্ষায় স্বতন্ত্র একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি এখন সময়ের দাবি।

 লেকসহ সব জলাশয়ের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় নেয়া হয় না বলেই এসব দখল ও দূষণ হচ্ছে। অথচ মৎস চাষ, কৃষিকাজ, বিনোদন, ভূ-গর্ভের পানির স্তর স্বাভাবিক রাখা ইত্যাদি নানা প্রয়োজনে জলাশয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ভূমিকা রাখতে পারে। শুধু তাৎক্ষনিকভাবে লাভবান হবার জন্যই এসব জলাশয়গুলো ভরাট করে দখল ও ভবন নির্মাণ চলছে। এ প্রবণতা বন্ধ করা দরকার। এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম তার প্রবন্ধে বলেন, স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো জলাশয় রক্ষায় আন্তরিকভাবে কাজ করলেও তাদের অভিজ্ঞতা না থাকায় সঠিকভাবে কাজ হচ্ছে না। যে কারণে দেখা যায়, জলাশয় রক্ষা করতে গিয়ে তারাও জলাশয়ের ক্ষতি করে ফেলেন। তবু সাম্প্রতিক সময়ে সুনামগঞ্জ পৌরসভা, বরিশাল সিটি করপোরেশন স্থানীয় নদীর পাড়কে বিনোদনকেন্দ্র হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেছেন, যা ঢাকার পাশ্ববর্তী নদী ও জলাশয়ের জন্য অনুকরণীয়।

 নগরে জলাশয় অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পুকুর, খাল, নদী-এসব জলাশয় নগরের প্রাণ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। জলাশয় না থাকলে নগরের তাপমাত্রা শুধু বৃদ্ধি পায় না, নগরে পানির স্তরও নীচে নেমে যায়। তাই জলাশয় রক্ষায় বিদ্যমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত সমাধান জরুরি। ড. গোলাম রহমান বলেন, অতীতে ঢাকায় অনেক খাল ছিল। খালকে কেন্দ্র করে ঢাকার অভ্যন্তরে নৌপথ ছিল। কিন্তু উন্নয়নের নামে অনেক খাল ধ্বংস হয়েছে। উন্নয়ন মানে পরিবেশ ধ্বংস নয়, এ ভাবনা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।


 বাংলাদেশে অসংখ্য আইন আছে, মহামান্য আদলতের নির্দেশনাও আছে। কিন্তু এসব যাদের বাস্তাবয়ন করার কথা, তারা নিরব। রাজউক আদালতে স্বীকার করেছে গুলশান-বারিধারা লেক সংকুচিত হয়েছে। কিন্তু দায় স্বীকার করলেইতো চলবে না। এসব উদ্ধারে বিদ্যমান আইন ও আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে আরও সক্রিয় হতে হবে।

 জলাশয়ে দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠায় একটা শ্রেণী দুর্বৃত্তায়নই দায়ী। কোন সাধারণ মানুষ ও দরিদ্র মানুষ জলাশয় দখল করছে না বা করতে পারে না। যারা দখল ও দূষণকারী, এরা প্রভাবশালী। কিন্তু এখন মানুষ নিজের প্রয়োজনেই সক্রিয় হচ্ছে, সোচ্চার হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তর অনেক সীমাবদ্ধতার মাঝেও আইন বাস্তবায়নে নিজস্ব ক্ষমতার মধ্যে কাজ করে যাচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরকে শক্তিশালী করতে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে গণমাধ্যম-সবার সহযোগিতা করা দরকার।