Saturday 6 November 2010

কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরকেই তামাক চাষ বন্ধে দায়িত্ব নিতে হবে

কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরকেই তামাক চাষ বন্ধে দায়িত্ব নিতে হবে

তামাক কোম্পানির কারণে কৃষি জমিতে তামাক চাষ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে খাদ্য সংকটের পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ, অর্থনীতি হুমকির সম্মুখীন। বর্তমানে প্রায় ৭৪০০০ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হচ্ছে। দেশের অধিকাংশ মানুষ যখন ঠিক মতো খেতে পারে না। খাদ্য যোগান যেখানে সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এমতাবস্থায় তামাকের আগ্রাসী বিস্তার দেশের খাদ্য নিরাপত্তা বিঘিœত করছে। তাই তামাক চাষ বন্ধে সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে
হবে।



তামাক চাষ বৃদ্ধির ফলে কৃষি জমি হ্রাসের পাশাপাশি গোখাদ্য সংকট, শিশু-কিশোরদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত, তামাকজনিত রোগ বৃদ্ধি, সামাজিক ও পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তামাক চাষের জন্য পার্বত্য এলাকার জমি ও নদীর তীর দখল হচ্ছে অত্র এলাকায় কৃষিজমি হ্রাসের প্রেক্ষিতে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। বন উজার করে কাঠ কাটা হচ্ছে, তামাক শুকানো হচ্ছে। গাছ কাটার প্রেক্ষিতে পরিবেশ বিপর্যয় সৃষ্টি হচ্ছে। কোম্পানিগুলো নিজেদের স্বার্থে দ্রুত বৃদ্ধি পায় এ ধরনের বিদেশী গাছ লাগাচ্ছে বনাঞ্চলে। বিদেশী গাছ আমাদের জীববৈচিত্রের জন্য হুমকি স্বরূপ।

ক্রমাগত তামাক চাষের কারণে জমির উর্বরতা শক্তি কমে যায়। এজন্য তামাক কোম্পানিগুলো নতুন নতুন এলাকার কৃষি জমিতে দরিদ্র কৃষকদের তামাক চাষে উদ্বুদ্ধ করছে। একটা সময় পর জমিগুলো যে কোন খাদ্যশস্য উৎপাদনের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়ে। পাশাপাশি তামাক চাষের সময়কালটা এমন, তামাক চাষ করার কারণে সব মৌসুমের খাদ্য উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয়। এজন্য খাদ্যের জমিতে তামাক চাষ নিষিদ্ধ করা দরকার। কৃষি বিভাগের ব্লক সুপারভাইজারগন তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করে খাদ্য শস্য উৎপাদনে উৎসাহ প্রদান করে তামাক নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।

কৃষি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষনে তামাক চাষ এর ক্ষতিকর দিক ও তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে করণীয় নির্ধারণ. কৃষি জমিতে তামাক চাষ বন্ধ করা এবং কৃষি নীতিমালায় কৃষি পণ্যের তালিকা থেকে তামাককে বাদ দেয়া, চলনবিল (পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জ), মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কক্সবাজার এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে চাষ অবিলম্বে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা, তামাক চাষে সার, কীটনাশকসহ সকল ধরনের সুবিধা নিষিদ্ধ করা, তামাকের পরিবর্তে খাদ্য শস্য উৎপাদনে কৃষকদের সহযোগিতা প্রদান এবং বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা নিশ্চিত এবং তামাক কোম্পানি কার্যক্রমে কৃষি স¤প্রসারণ কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ না করতে নির্দেশনা প্রদানের দাবি জানান।

এ সময় কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর দেশের কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়ন, খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিতকরন ইত্যাদি ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। কৃষি জমির উর্বরতা রক্ষা ও খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে তাদের সক্রিয় ভূমিকা অব্যাহত থাকবে।

No comments:

Post a Comment