Saturday 15 October 2011

নগরে হাঁটা ও সাইকেল চালানোর উপযোগী পরিবেশ গড়ে তুলুন


জ্বালানী নির্ভরতা হ্রাস, যাতায়াত খরচ কমানো, অসংক্রামক রোগ এর ঝুঁকি হ্রাস করা এবং দূষণ নিয়ন্ত্রনে হাঁটা ও সাইকেলে চলাচলের নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন। নগর জীবনে যাতায়াত ব্যয় বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে সীমিত আয়ের মানুষকে হিমশিত খেতে হচ্ছে। তাই পথচারী চলাচল ও সাইকেল চালনাকে উৎসাহ দিয়ে যাতায়াত পরিকল্পনা গড়ে তুলতে হবে।

মানুষের সুস্থ্য থাকার জন্য প্রতিদিন কমপে ৩০ মিনিট হাঁটা কিংবা সাইকেল চালালে অনেক অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি কমে যায়। প্রতিদিন ৩০ মিনিট সাইকেল চালালে মানুষের মধ্যে মুটিয়ে যাবার প্রবণতা ৫০ভাগ, উচ্চরক্তচাপ এর প্রবণতা ৩০ভাগ, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস এর প্রবণতা ৫০ভাগ কমে আসবে। তিনি আরও বলেন, সর্বাধিক সংখ্যক মানুষ যাতায়াত করে পায়ে হেটে। ঢাকায় ৭৬% যাতায়াত হয় ৫ কিলোমিটার এর মধ্যে, এরও অর্ধেক ২ কিলোমিটারের মধ্যে। যে কারণে হাঁটা ও সাইকেলে চলাচলের ভাল পরিবেশ থাকলে মানুষ খুব সহজে যাতায়াত চাহিদা পূরন করতে পারে।

সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ হাটলেও ফুটপাতের উপর গাড়ি পার্কিং, ময়লা-আবর্জনা রাখা বা অন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে মানুষের হাঁটা পথে সমস্যা সৃষ্টি করা হচ্ছে। আর এসব সমস্যা দূর করে হাঁটার উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টিতে কোন সংস্থা দায়িত্ব পালন করছে না।

ঢাকার পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য রার্থে মানুষের হাঁটার উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির তাগিদ নীতিনির্ধারকদের অনুভব করতে হবে। মন্ত্রী-এমপি-রাজনীতিবিদ-সরকারী কর্মকর্তাদের বিলাসী জীবন পরিত্যাগ করে সাধারণ কাতারে আসতে হবে। যত্রতত্র প্রাইভেট গাড়ি পার্কিং করে মানুষের হাঁটা পথে সমস্যা সৃষ্টি করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের যাতায়াত সমস্যা সৃষ্টি করে কতিপয় মানুষকে সুবিধা দেয়ার পরিকল্পনা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

সব বড় রাস্তার পাশে একটা ছোট রাস্তা (সার্ভিস রোড) থাকে। মিরপুর সড়কে কিছুদিন আগে এ সার্ভিস রোড নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে। এতে জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। উত্তরা এলাকায় প্রধান সড়কের পাশে একটি সার্ভিস রোড আছে। এটা যেন টিকে থাকে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। রাজউক, সিটি করপোরেশনসহ ঢাকায় অনেক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে, এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয় করা দরকার। পরিকল্পনাবিদরা ডিজাইন দিলেও সেগুলো রাজনৈতিক কিংবা প্রশাসনিক, নানা কারণে কার্যকর হয় না।

মানুষ যত বেশি হাঁটবে যান্ত্রিক যান ব্যবহার তত কম দরকার হবে। আর যান্ত্রিক যানের ব্যবহার কম হলে পরিবেশ ভাল থাকবে। বিশেষ করে ব্যক্তিগত যান বৃদ্ধিতে নগরের পরিবেশ যেভাবে তিগ্রস্ত হচ্ছে তা যদি এখনই নিয়ন্ত্রণ করা না হয় তবে একসময় ঢাকা অসহনীয় হয়ে উঠবে।

No comments:

Post a Comment