Thursday 28 October 2010

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় পার্বত্য জেলাসহ সর্বত্র তামাক চাষ নিষিদ্ধ করুন

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় পার্বত্য জেলাসহ সর্বত্র তামাক চাষ নিষিদ্ধ করুন | খাদ্যের জমি ধ্বংস ও ক্ষতিকর খাদ্যের জমিতে তামাক চাষ করায় জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ, জীববৈচিত্র মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া তামাক চাষ খাদ্য সংকটকে বাড়িয়ে তুলছে। তামাক চাষ কৃষি জমিকে ক্রমশ ধবংশ করছে। জমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে। এ কারণে তামাক কোম্পানিগুলো নতুন নতুন এলাকায় উর্বর খাদ্যের জমিতে তামাক চাষ করানোর জন্য নানারকম প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে দরিদ্র ও নিরক্ষর কৃষকদের তামাক চাষে ধাবিত করছে। তাই অবিলম্বে খাদ্যের জমিতে তামাক চাষ নিষিদ্ধ করতে হবে। এবং দরিদ্র ও নিরক্ষর কৃষকদের তামাক চাষে ধাবিত করার জন্য তামাক কোম্পানিগুলোকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

তামাক চাষের জন্য জমি তৈরি, চারা রোপন, পাতা তোলা ও তামাক গাছ উৎপাদন ইত্যাদির জন্য আগষ্ট থেকে এপ্রিল পর্যন্ত মোট ৮ মাস সময় লাগে। তামাক চাষের কারণে বছরের প্রধান তিনটি মৌসুমের ফসলই নষ্ট হয়। তামাক চাষের কারণে আলু, বেগুন, টমেটো, মূলা, বাদাম, কপি, মিষ্টি কুমড়া, সরিষা, গম, নানারকম ডাল, পেয়াজ, তরমুজ সহ সকল রবিশষ্য ও ঢেড়শ, বরবটি, করলা, ঝিঙ্গা, পালংশাক, পুইশাক, ডাটা, পাটশাকসহ শীতকালীন সব সব্জি চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া সময়ের মারপ্যাচে আমন ধান ও বোরো ধান চাষ করা যায় না তামাক চাষের জমিতে, যে কারণে খাদ্য নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে হুমকির সম্মুখীন।

বাংলাদেশে যে পরিমাণ জমিতে তামাক চাষ হচ্ছে, সে জমিগুলোতে খাদ্য চাষ করলে বাংলাদেশে খাদ্য সংকট দূর করা সম্ভব। তামাক চাষ বেড়ে যাওয়ায় গোখাদ্য সংকট, শিশু-কিশোরদের শিক্ষা ব্যহত, তামাকজনিত রোগ ও মানুষের মৃত্যু বৃদ্ধিসহ পারিবারিক ও সামাজিক সংকট বেড়ে যাচ্ছে। বান্দরবানসহ পার্বত্য জেলাগুলোতে তামাক কোম্পানিগুলোর আগ্রাসন বেড়ে যাওয়ায় সেখানকার পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য, জীববৈচিত্র সবই হুমকির সম্মুখীন। তাই পার্বত্য জেলাসহ সর্বত্রই খাদ্যের জমিতে তামাক চাষ নিষিদ্ধ করা দরকার।

দেশের কৃষি জমি ও বনভূমি রক্ষা, পরিবেশ বিপর্যয় রোধ, খাদ্যসংকট মোকাবেলায় কৃষি জমিতে তামাক চাষ বন্ধ করা, বনায়নের নামে তামাক কোম্পানিগুলোর বৃক্ষরোপনের নামে বিদেশী গাছ লাগানো নিষিদ্ধ করা এবং দরিদ্র কৃষকদের দরিদ্রতার চক্রে ধাবিত করা ও তামাক চাষে ধাবিত করায় তামাক কোম্পানিগুলোকে শাস্তির আওতায় আনা।

No comments:

Post a Comment