Thursday 26 March 2015

আমাদের বাঁচতে দিন, বুড়িগঙ্গা দূষণ বন্ধ করুন। বুড়িগঙ্গা পাড়ের শিশুদের আহবান

আমাদের বাঁচতে দিন, বুড়িগঙ্গা দূষণ বন্ধ করুন। বুড়িগঙ্গা পাড়ের শিশুদের আহবান

আজ বুধবার ৭মে ২০১৪ বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে বছিলা গ্রামের বছিলা (পুরাতন) সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের  প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুইশতাধিক স্কুলের শিশু অঙ্গীকারবদ্ধ হয় তারা নদী দূষণরোধে স্থানীয় এলাকাবাসীদের সচেতন করবে এবং নিজেরা নদী দূষণ থেকে বিরত থাকবে।

 বিগত কয়েক দশক যাবৎ ল্য করা যাচ্ছে যে, সরকারী উদাসীনতা, সিদ্ধান্তহীনতা, দূর্বলতা, দূর্ণীতি ও সমন্বয়হীনতার কারণে আমাদের নদীসমূহ ক্রমাগতভাবে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, দখল-দূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং মানুষ সুপেয় পানির অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। ঢাকা মহানগরী পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর পরিবেশের অধিকারী জনপদ হিসেবে পরিচিত ছিল। আজ তা বিশ্বের সর্বোচ্চ দূষিত, পূঁতিগন্ধময়, অপরিস্কার, ময়লা অধ্যুষিত, ক্রমাগত পানিশূন্যতার শিকার, হতশ্রী শহরে পরিণত হচ্ছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে মহানগরীর চারপাশের সকল নদীতে ব্যাপক দখল ও দূষণজনিত বিপর্যয়।

বুড়িগঙ্গাসহ ঢাকার আশেপাশের প্রায় সকল নদীগুলো অবৈধভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে, যেখানে-সেখানে ঘর-বাড়ী, কারখানা, ইটের ভাটা তৈরী হচ্ছে, লংঘিত হচ্ছে জলাশয় সংরণ আইন। বিভিন্ন সময়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ল্েয অভিযান চালানো হলেও অজ্ঞাত কারণে সম্পূর্ণ হয়নি। ২৭৭টি ট্যানারী, যাত্রীবাহী ও ব্যবসায়িক জাহাজ নিঃসৃত জ্বালানী ও ময়লা, সরকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ওয়াসার সকল ময়লা চার-পাঁচটি বৃহৎ ড্রেণ দিয়েই প্রতি সেকেন্ডে প্রায় তিন কিউবিক ঘনমিটার বর্জ্য, বছরে ৮৮ টন ট্যানারী বর্জ্য।

 শিল্প কারখানায় কোন বর্জ্য পরিশোধন ব্যবস্থা না থাকায় মারাতœক বর্জ্য নদীসমূহকে দূষিত করছে।  বুড়িগঙ্গা নদীতে প্রচুর এমোনিয়া, ক্যালসিয়াম কোরাইড, সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড, সালফিউরিক এসিড, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাংগানিজ, লোহা, তামা, দস্তা, আর্সেনিক, ব্রোমিন, সীসা, নিকেল, স্ট্রংশিয়াম, ক্যাডমিয়াম, রুবিডিয়াম, থ্যালিয়াম, ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম ও  সীসার মত রাসয়ানিক বর্জ্য প্রতিমূহুর্তেই পড়ছে।  এই দূষণের কারণে পানিতে দ্রবিভূত অক্সিজেনের পরিমান এতই কম যে এগুলোতে কোন জলজ প্রাণী বা মাছ নাই। শিল্পপতিরা বর্জ্য উৎপাদক কারখানাসমূহে বর্জ্য পরিশোধন প্ল্যান্ট সংযোজন করছে না। তাদের মুনাফার বদলে জাতি তার সকল নদী জলাশয় হারাতে বসেছে, পানি হচ্ছে ভীষণ ভাবে দূষিত, জনস্বাস্থ্য হুমকীর মুখে। নদীর দুই পাড়ের লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনের ।
    
 ঢাকা ও চারপাশের নান্দনিক সৌন্দর্য, ফসল, মৎস সম্পদ, নৌ-পরিবহন, জনমানুষের জীবন-জীবিকা, আবাসন ও সু-স্বাস্থ্যের জন্য এই  নদীসমূহ রা করতে হবে, কারণ নদী বাঁচানোর দাবী আমাদের জীবন বাঁচানোর সমার্থক। দূষিত করার ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও রাষ্ট্রীয় সকল কর্মকান্ড এখনই বন্ধ করতে হবে। আর নদী বিপর্যয়ের চলমান প্রক্রিয়া বন্ধ না হলে ঢাকার পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য বিপর্যয় আরো বৃদ্ধি পাবে, মহানগরী হবে বসবাসের অযোগ্য।

No comments:

Post a Comment